রান্নাঘরে বিশ্বরূপ দর্শন ৩
Chicken dakbanglow
ডাকবাংলো চিকেন রোস্ট – বিশ্বরূপ ঘোষ দস্তিদার
আশাকরি আগের পর্বের রান্নাটা ট্রাই করেছো কেউ কেউ। কেমন লাগলো জানাতে ভুলো না। আজকে একটা মশলা সম্পর্কে একটু গল্প করবো, যাকে আমরা বলি গোল মরিচ। শুনেছি ভাস্কো-ডা-গামা মূলতঃ ভারতবর্ষ থেকে গোলমরিচ নিয়ে গিয়ে পশ্চিম দেশে এটিকে প্রথম পরিচয় করান।
মূলতঃ কেরালায় এটি পাওয়া যেত। সংস্কৃত ভাষায় এটিকে পিপ্পলী বলা হতো। ২০০০ বছর আগে থেকেই ভারত তথা দক্ষিণ পূর্ব এশিয়াতে এটি ছিল মহা মূল্যবান একটি সমগ্রী। সোনা, রুপার মতো এটিকেও বিনিময় মূল্যে ব্যবহার করা হতো সে সময়ে। আজ আফ্রিকার উৎপাদন আমাদের ছাড়িয়ে গেছে,কিন্তু একটা সময় ভারতেই এটি সবচেয়ে বেশি পাওয়া যেত।
কালো সোনা বা ব্ল্যাক পেপার সেই থেকে আমাদের থেকেও ইউরোপে বেশি প্রচলন হলো। লংকার মতো সুতীব্র ঝাল নয়, কিন্তু সুগন্ধিত এই মশলাটি ব্রেডবাটারের সঙ্গে, অথবা যেকোনো রান্নায় খুব পপুলার একটি মশলায় পরিণত হলো।
আমাদের দেশের রান্নায় যুগে যুগে মধ্য প্রাচ্য ও ইউরোপের প্রভাব পড়েছে। ইংরেজরা নিজেদের পছন্দের স্বাদটি এদেশের বাবুর্চিদের শিখিয়ে পড়িয়ে নিয়েছিলেন। এ দেশে চা বাগান অঞ্চলে, সরকারি ডাকবাংলোতে এসব বাবুর্চিরা দু-শতক ধরে এ সব রান্নায় পারদর্শী হয়েছেন। আজকের রান্না তারই একটা পপুলার মেনু, ডাকবাংলো চিকেন রোস্ট। এই রান্নাটা হালকা পোলাও, জিরা রাইস, সাদা ভাত কিংবা পরোটা লুচি দিয়েও অনবদ্য লাগে খেতে। চলো, দেখেনি কি করে তৈরি করা যায় এই সুস্বাদু পদটি।
![](https://i0.wp.com/ritujanpub.com/wp-content/uploads/2021/07/E3-Daak.jpeg?resize=506%2C636&ssl=1)
ডাকবাংলো চিকেন রোস্ট
★ মুরগির মাংস ১ কেজি
★ পেঁয়াজ বাটা ৪ টা
★ আদাবাটা ২ ইঞ্চি
★ রসুন বাটা ১৫ কোয়া
★ গোলমরিচ গুঁড়ো
★ গুঁড়ো গরম মশলা
★ লবন ও চিনি স্বাদ মতো
★ সাদা তেল বা গাওয়া ঘি।
মূল রান্না ঘি দিয়েই হয়। তবে এ যুগের ও স্বাস্থ্যের পরিস্থিতিতে সাদা তেলে একচামচ ঘি মেশালেও হবে। এটা জানবে মুরগি রান্নায় রসুন লাগে বেশি। একটা বড় পাত্রে মুরগির টুকরোগুলো লবণ মাখিয়ে রেখে তার ওপর যথাক্রমে পেঁয়াজ বাটা,আদা বাটা ও রসুন বাটা একটা কাপড়ের মধ্যে ছেঁকে সেই রসে ভিজিয়ে রেখে দাও দুতিন ঘন্টা। আরও আগে ভেজালে আরও ভালো। যত বেশি ম্যারিনেড করবে,স্বাদ তত বেশি হবে। কাপড়ে রাখা রাস চিপে রাখা ছিবড়েগুলো জমিয়ে রাখবে, ফেলে দেবে না।
কড়াইতে তেল দিয়ে ঘি মিশিয়ে মাধ্যম আঁচে মুরগি ভেজে নাও ভালো করে।গায়ে রং ধরবে। দেখবে তেল ছেঁটে এই পর্যায়ে। ঢেকে ঢেকে সাবধানে সব টুকরোগুলো ভেজে নামিয়ে রাখো। ওই তেলেই বাকি পড়ে থাকা মুরগির ম্যারিনেশন, রেখে দেওয়া ছিবড়ে ছেড়ে দিয়ে রান্না কারো মধ্যম আঁচে। ভাজা হয়ে গেলে এর মধ্যে দাও ভাজা মুরগি গুলো। একটু জল দাও।গা মাখা হয়ে এলে দাও বেশি করে গোলমরিচের গুঁড়ো। দু পাঁচটা আস্ত গোলমরিচ ছেড়ে দিতে পারো চাইলে। গোল মরিচ দিলে লক্ষ্য করবে, মশলা কড়াইতে অতটা লেগে যাবে না। ভালো করে নেড়ে চেড়ে গরমমসলা গুঁড়ো ছড়িয়ে নামিয়ে নাও।