ঘরে তৈরি এগ নুডলস – অতনু দত্ত

আচ্ছা মনে করুন এই লক ডাউনের কোন এক সন্ধেবেলা আপনার পুত্র কন্যা বায়না ধরলো নুডলস খাবে। না না, ওই খচাৎ করে ছেঁড়া পুঁচকে প্যাকেটের একতাল শুকনো ময়দার মোটা সুতো আর এক খামচি মশলা গরম জলে ফুটিয়ে নেয়া নুডলস নয়, আসলি সাদা সাদা নরম গরম এগ হাক্কা নুডলস, সবজি সস টস দেয়া।
বানাতে গিয়ে দেখলেন স্টক খালি, আগের দিনই শেষ হয়েছিল, নতুন প্যাকেট আনাতে ভুলে গেছেন। ওদিকে ছেলে মেয়ে নুডলসের স্বপ্নে মজে গিয়ে গল্প শুরু করেছে কোন রেস্তোরাঁর নুডলস কত ভালো…
কি করবেন? ওদের স্বপ্ন ভঙ্গ? কারণ সব দোকান তো বন্ধ হয়ে গেছে। কাজেই ওদের বলতে হবে, বাছারা আমার, আজ একটু ম্যানেজ করে নে প্লিজ। আজ রুটি তরকারি দিয়ে কাজ চালিয়ে নে…
তখন ওরা মুখ কালো আর মাথা নিচু করে পা ঘষটে ঘষটে নিজের ঘরে ফিরে যাবে। ভাবতেই কষ্ট হচ্ছে, না?
আরে কষ্ট পাওয়ার কোন কারণ নেই। চলুন আজ শিখিয়ে দিই ঘরেই ফটাফট নুডলস তৈরি করার সহজ উপায়। যা উপকরণ লাগবে তা আমাদের ঘরে সবসময় থাকে। তার সাথে লাগবে একটু ধৈর্য্য, একটু পরিশ্রম আর একটু সময়। বাচ্চাদের ঘর আলো করা হাসির সামনে সে আর এমন কি… তাছাড়া খেয়ে দেখবেন, ঘরে বানানো নুডলসের সফ্টনেস আর স্বাদ দুইই অদ্ভুত রকমের ভালো।
চলুন তাহলে শুরু করা যাক।
একটা বড় পাত্রে নিয়ে নিন দেড় কাপ ময়দা আর এক কাপ আটা। এতে চারজনের ডিনারের জন্য নুডলস তৈরি হয়ে যাবে। পৌনে ছোট চামচ নুন দিয়ে ভালো করে মিশিয়ে নিন। আরেকটা বাটিতে তিনটে ডিম ভেঙে তার সাথে তিন টেবিল চামচ জল মিশিয়ে ফেটিয়ে নিন। তারপর ডিমের মিশ্রণ দিয়ে আটা মেখে ফেলুন। এখানেই কিন্তু নুডলস বানানোর আসল ট্রিক। মাখাটা খুব শক্ত হয় যেন। মাখতে গেলে যেন রীতিমত জোর লাগে। মেখে ঢেকে রেখে দিন মিনিট দশেক। দেখবেন মাখাটা আগের চেয়ে স্মুদ হয়েছে। আবার কয়েক মিনিট ডলে তিন ভাগে ভাগ করে নিন। একটা বড় জায়গায় যথেষ্ট পরিমাণ ময়দা ছড়িয়ে একটা গোলাকে বেশ বড় করে বেলে ফেলুন। মনে রাখবেন রুটিটা যেন মোটা না থাকে আবার ফিনফিনে পাতলা ও না হয়। মাখা শক্ত হওয়ায় রুটিটা বেশ শক্ত হবে। ময়দা ছড়িয়ে ভালো করে ঘষে দিন দু পিঠেই। এবারে আড়াই ইঞ্চি মাপে পরপর সোজা উল্টো করে আলগা ভাঁজ করে নিন। একটা ধারালো ছুরি দিয়ে এক সাইড থেকে যতটা সম্ভব পাতলা করে কাটতে থাকুন। খেয়াল রাখবেন খুব বেশি হাত দিয়ে ভাঁজের ওপর চাপ দেবেন না। কাটার পর টুকরোটা খুললেই দেখবেন লম্বা একটা নুডল আপনার হাতে। ব্যাস, হাত চালিয়ে কেটে নিন বাকি টুকু। শুনতে ঝামেলার লাগলেও আসলে কিন্তু ব্যাপারটা যথেষ্ট সোজা।

একই ভাবে অন্য দুটো রুটি বেলে কেটে নিন। আপনার নুডলস রেডি। একটা বড় কড়াইয়ে জল ভালো করে ফুটে গেলে ছেড়ে দিন তাতে। খেয়াল রাখবেন কড়াই যেন ক্রাউডেড না হয়, জল অনুপাতে নুডলস কম হওয়া দরকার। দু চা চামচ সাদা তেল দিয়ে দিন ফুটন্ত জলে।
মিনিট পাঁচেক ফুটলেই দেখবেন চকচকে নুডলস গুলো ফুটন্ত জল থেকে আপনার দিকে তাকিয়ে হাসছে। এক পিস তুলে টিপে দেখুন সেদ্ধ হয়েছে কিনা। হলে একটা ফুটো বাটিতে ঢেলে জল ড্রেইন করে নিন।
তারপর আপনার যেভাবে ইচ্ছে এবং যা যা দিয়ে পছন্দ সেভাবেই বানিয়ে নিন সুপার সফ্ট ও সুপার টেস্টি নুডলস। গ্যারান্টি দিলাম, খেয়ে বলবেন, বাহ, এমন তো আগে খাই নি…
কি অবশেষে হাসি ফুটেছে তো পুত্র এবং কন্যার মুখে?
- কচ্ছপের বেঁচে থাকা – দেবব্রত সান্যাল (একাদশ কিস্তি)বৃষ্টির শুরুতেই সামান্য ঠান্ডা পড়তে শুরু করলো। ক্লাবে লোক আসা একটু কমলো। বিকেলে ব্যাডমিন্টন খেলতে…
- কচ্ছপের বেঁচে থাকা – দেবব্রত সান্যাল (দশম কিস্তি)(৮) শিফট ডিউটি আরম্ভ হতেই জীবনটা জীবিকার প্রয়োজন মাত্র হয়ে দাঁড়াল। অদ্ভুত সময়ে ঘুম থেকে…
- কচ্ছপের বেঁচে থাকা – দেবব্রত সান্যাল (নবম কিস্তি)আমাদের পুরো ব্যাচটাকে কয়েকটা ছোট ছোট দলে ভাগ করা হলো। আমাদের দলে আমি, কর, সিং…
- কচ্ছপের বেঁচে থাকা – দেবব্রত সান্যাল (অষ্টম কিস্তি)আমার মুখে হাসির ছোঁয়া দেখে বিপদভঞ্জন দুঃখ দুঃখ মুখ করে জিজ্ঞেস করল, ‘ছেড়ে দিলো?’ ‘কান…
- কচ্ছপের বেঁচে থাকা – দেবব্রত সান্যাল (সপ্তম কিস্তি)নিকলের নিয়োগপত্র বার পাঁচেক খুঁটিয়ে পড়ে নিশ্চিন্ত হয়ে, আমার টুইডের কোটটা গায়ে দিয়ে অফিসে গেলাম।…