ভালোবাসার ডাকঘর ৪ – ঐশ্বর্য্য চ্যাটার্জী
প্রিয়,
খুব অযত্নে, অবহেলায় অনেক কিছুই হারিয়ে যায় – আমি তাই হারিয়ে যাচ্ছিলাম।অনেক প্রাণপণ চেষ্টা করছিলাম। শেষে পরাজিত হয়ে হারা মানতে হয়। একই যুদ্ধে সবাই জয়ী হয় না, আমার হার অন্য জনের জয় এটাই তো হয় কি বলিস? তাই ঠিক করলাম এখানের সব কিছু ঝামেলা মিটিয়ে দূরে যাব। সেই মত প্রস্তুতি নিলাম। আমার যাবার আগে একটা সন্ধ্যাবেলাতে তোর সাথে দেখা করা।খুব সুন্দর ছিল সে দিনটা, তোর কি অভিমান ছিল? মনে আছে।
চোখের নোনা জল উপচে পড়ছিল, কি করুন, কি মায়া লাগছিল তোকে দেখে।নিজেকে সংযত করা খুবই কঠিন হয়ে পরে।যত উষ্ণতা পেরেছিলাম দিয়েছিলাম তা ঢেলে।সমুদ্রের তর্জন,গর্জন, চঞ্চল নদীটিও কেমন যেন স্থাণু হয়েছিল, কিছুটা সময় আমরা আমাদের নিজেদের রাগ, অভিমান সব ভুলে একাত্ম হয়েছিলাম। চলে যাবার আগে তোর একটা কথা আজও মনে পড়ে, তুই বলেছিলি যে- এই দিনটা আমার ওখানে গিয়েও মনে পরবে।আর আমি যেন পৌঁছে তোকে ফোন করি।বিশ্বাস কর অনেক চেষ্টা করেও পারিনি, রাতে ফোন করি তোকে। কথাও হয় অনেক। বাইরে গিয়েও তোর সাথে ফোনে প্রেমালাপ চলচ্ছিল ভালোই, বেশদিন টিকলোনা তোর প্রিয় মানুষের আগমনে আমার প্রেম মাঠে মারা গেল। যাই হোক তোকে ভোলার জন্যই এতদূরে এলাম, তোকে ভুলতেই ভুলেগেছি। অনেক অভিমান দুঃখ নিয়ে ছিলাম, তারপর তোর সাথে যোগাযোগ কমে, দূরত্ব বেড়ে যায় শুধু। এই করে বেশ কিছুদিন যায় আমি ফিরেও আসি। বহুদিন বাদে নিজের বাড়ি, নিজের গ্রামে ফেরার অনুভূতিও আলাদা।যোগাযোগ হয় তোর সাথে,শুধু বন্ধুত্বের দাবি করিস। সব ভুলে শুধু বন্ধু থাকতে বলিস, আমি মানতে পারলাম না, বহুদূরে সরে গেলি। আমি চাইলেও আর তোর সাথে কথা হয় না, তোকে দেখিনা কত দিন বলতো? কাজে নিজে ভীষণ ব্যস্ত থাকি, আর কি বা করি বল। তোকে দেখার প্রথম দিনে আমার হেডফোনে “Tum Ho Sath Mere pase mere”গানটা বাজছিলো, আজও বাজে মরে যাওয়া অনুভূতি নিয়ে।এভাবেই দিন কেটে যায় বহুদিন। এখন কষ্ট গুলোর ও কষ্ট হয় খুব। কিছু বাদে খবর পাই তুই নিজের ঘর বাঁধচ্ছিস। শুনে থেকে নিজের অজান্তেই নোনা জলের স্বাদ পাই।ভালোবাসা বোধহয় সহজে হার মানে না।তো ভগবানের কাছে চাই যেন শেষবারের মত সময় কাটাতে পারি তোর সাথে, কোনো জবাবদিহি না কিছুটা সময় শুধু, আর কয়েকটা প্রিয় গান যদি একসাথে শোনা যায়। সে সুযোগ যে পাব আশা করিনি, কিন্তু পেলাম। একে অপরকে দেখে শুধু অচেনা হয়ে রইলাম আর মোবাইলে বেজে গেল প্রিয় গান “ওরা মনের গোপন জানে না, ওরা হৃদয়ের রং চেনে না” তারপর “ধরো যদি হঠাৎ সন্ধ্যে” আর শেষে “প্রাণ দিতে চাই, মন দিতে চাই”। আমার একতরফা প্রেম, সেদিন থেকে এক্কেবারে একা হয়ে গেল। তোর সাইকোটা যে সাইকো হয়ে গেল। তখন থেকে আর কান্না আসে না, সব কিছুর গুরুত্ব নিজের কাছে কমতে থাকে জানিস? শুনতে পাচ্ছিস আমায়, শুনতে পাচ্ছিস…বড্ড ক্লান্ত, পরিশ্রান্ত লাগছে। আআআ…
ইতি
তোর সাইকো
ঐশ্বর্য্য চ্যাটার্জী
- কচ্ছপের বেঁচে থাকা – দেবব্রত সান্যাল (একাদশ কিস্তি)বৃষ্টির শুরুতেই সামান্য ঠান্ডা পড়তে শুরু করলো। ক্লাবে লোক আসা একটু কমলো। বিকেলে ব্যাডমিন্টন খেলতে…
- কচ্ছপের বেঁচে থাকা – দেবব্রত সান্যাল (দশম কিস্তি)(৮) শিফট ডিউটি আরম্ভ হতেই জীবনটা জীবিকার প্রয়োজন মাত্র হয়ে দাঁড়াল। অদ্ভুত সময়ে ঘুম থেকে…
- কচ্ছপের বেঁচে থাকা – দেবব্রত সান্যাল (নবম কিস্তি)আমাদের পুরো ব্যাচটাকে কয়েকটা ছোট ছোট দলে ভাগ করা হলো। আমাদের দলে আমি, কর, সিং…
- কচ্ছপের বেঁচে থাকা – দেবব্রত সান্যাল (অষ্টম কিস্তি)আমার মুখে হাসির ছোঁয়া দেখে বিপদভঞ্জন দুঃখ দুঃখ মুখ করে জিজ্ঞেস করল, ‘ছেড়ে দিলো?’ ‘কান…
- কচ্ছপের বেঁচে থাকা – দেবব্রত সান্যাল (সপ্তম কিস্তি)নিকলের নিয়োগপত্র বার পাঁচেক খুঁটিয়ে পড়ে নিশ্চিন্ত হয়ে, আমার টুইডের কোটটা গায়ে দিয়ে অফিসে গেলাম।…