পশ্চিমবঙ্গের পাঁচটি রাজবাড়িতে রাজকীয় রাত্রিবাস
ওয়েবডেস্ক : আমাদের বঙ্গভূমিতেই কত ঘুরতে যাওয়ার স্থান রয়েছে কিন্তু রয়্যাল ব্যাপারটা ঠিক হয় না। যেখানেই যাবেন একটা হ্যারিকেন ট্যুর। মনে হয় যেন সেই তো টেনে টেনে নিয়ে চলেছে আপনাকে ট্যুর পার্টির মতো। বেশ রাজা রাজা ভাবটাই আসে না। এই তো অফিসে প্রজার মতো কাজ, কেউ কেউ বলে গাধার খাটনি, এখন আবার আটি সেক্টরে বারো ঘন্টার খাটনি আপনার জন্যই অপেক্ষা করছে। রাজা হওয়ার উপায় নেই। তাই মনটা খারাপ!! আমরা ঋতুযান পাবলিকেশন নিয়ে এলাম মুশকিল আসান। এবার আপনিও হয়ে উঠতে পারেন কয়েকদিনের জন্য রাজা। ভাবছেন কিভাবে!!
আমাদের পশ্চিমবঙ্গেই রয়েছে বহু ঐতিহ্যবাহী জমিদারি বাড়ি। একটু এদিক সেদিকে যেতে চাইলে, দুই তিন দিনের একটা ট্যুর করেই আসতে পারেন। রাজার মতো থেকে খেয়ে রাত্রিবাসের পুরোপুরি সুবন্দোবস্ত রয়েছে। আসুন তাহলে দেখে নেওয়া যাক সবচেয়ে ভাল পাঁচটি রাজবাড়ির হাল-হদিশ।
বাওয়ালি রাজবাড়ি
![](https://i0.wp.com/ritujanpub.com/wp-content/uploads/2021/04/the-rajbari-bawali.jpg?resize=550%2C367&ssl=1)
বজবজের নাম আমাদের কাছে অনেক কারণেই পরিচিত। আপনাকে বাওয়ালি রাজবাড়ি যেতে হলে বজবজে পৌঁছাতে হবে। এই বাওয়ালি রাজবাড়ি স্থানটি কলকাতার থেকে ৩৩.৪ কিমি দূরে অবস্থিত। শিয়ালদহ থেকে ট্রেনে বজবজ স্টেশনে নেমে আপনারা পৌঁছে যেতে পারেন এখানে। বজবজ স্টেশনে নেমে রিক্সোতে কয়েক মিনিটের পথ। দূরত্ব কম হলেও বাওয়ালি রাজবাড়ি পৌঁছে বেশ একটা রয়্যাল ফিলিং অনুভব করবেন। রাজবাড়ির পুরোন দিনের ৪টি ঘরে পর্যটকদের থাকবার জন্য বিশেষ ভাবে বন্দোবস্ত করা হয়েছে। ঘর পিছু প্রতিদিন আপনাকে দিতে হবে ৭,৫০০ টাকা। একটু বেশি ভাড়ার মতো মনে হতেই পারে কারণ এখানে আসলে থাকার স্থানে পেয়ে যাবেন রাজবাড়ির জমিদার পরিবারের ৩০০ বছরের পুরোনো রন্ধনশৈলির মেন্যু। যোগাযোগ-098303 83008
বলাখানা রাজবাড়ি
![](https://i0.wp.com/ritujanpub.com/wp-content/uploads/2021/04/download-9.jpg?resize=640%2C218&ssl=1)
কৃষ্ণনগরের বলাখানা রাজবাড়ির নাম অনেকেই শুনেছেন। অনেকেই কৃষ্ণনগরের ঘূর্ণীর পুতুলের নামও শুনেছেন। তাই এখানে আসতেই পারেন। রাজবাড়িতে জমিয়ে আরাম খাওয়ার পাশাপাশি একটু প্রকৃতির সৌন্দর্য ও ফেরার পথে ঘূর্ণীর পুতুল নিয়ে ফিরতে পারেন। নদীয়ার কৃষ্ণনগরে এসে ঘুরে যেতেই পারেন। নদীয়া জেলার কৃষ্ণনগরে আপনি গাড়িতে, বাসে বা ট্রেনে আসতে পারেন। শিয়ালদহ থেকে ট্রেন পেয়ে যাবেন। এই রাজবাড়ি কৃষ্ণনগর থেকে মাত্র ১১.৫ কিমি দূরে নবদ্বীপ ঘাট রোডের ওপর অবস্থিত। এখানকার প্রধান আকর্ষণ হল ৪ ফুট উঁচু পালঙ্ক, যেখানে শুতে হলে আপনাকে সিঁড়ি দিয়ে উঠতে হবে। এখানে থাকতে হলে আপনাকে ঘর পিছু ৩,৫০০টাকা খরচ করতে হবে। এক সময়ের ফরাসী সাহেবরা এখানেই থাকতেন। এই রাজবাড়িতে ইতিহাসের পথ ধরে পরবর্তীতে বাড়ির মালিক হন পালচৌধুরিরা।
![](https://i0.wp.com/ritujanpub.com/wp-content/uploads/2021/04/maheshganj-estate-balakhana.jpg?resize=550%2C412&ssl=1)
কাশিমবাজার রাজবাড়ি
![](https://i0.wp.com/ritujanpub.com/wp-content/uploads/2021/04/5ca1a9633acd99404ee4f660_1554098531816.jpg?resize=640%2C360&ssl=1)
উত্তরবঙ্গের মুর্শিদাবাদে অবস্থিত কাশিমবাজার। হাওড়া থেকে মুর্শিদাবাদের বহরমপুরে যাওয়ার অনেক ট্রেন রয়েছে। আপনাকে মুর্শিদাবাদের বহরমপুরে পৌঁছাতে হবে। স্টেশন থেকে ২.৯ কিমি এগোলেই কাশিমবাজার রোডে পড়বে কাশিমবাজার রাজবাড়ি। এই কাশিমবাজার রাজবাড়ির ৩টি ঘরকে এখন থাকবার জন্য ভাড়া দেওয়া হয়ে থাকে। প্রতিটি ঘরের ভাড়া ২০০০ টাকা। নবাবের শহর মুর্শিদাবাদে এইরকম এক রাজবাড়িতে থাকবার অভিজ্ঞতাই আলাদা বলে জানিয়েছেন রাজবাড়ির সদস্যরা। রয়্যাল শুধু নয়, এই রাজবাড়িতে আপনি নিজেকে নবাব বলেও মনে করতে পারবেন। যোগাযোগ- 098310 31108
সাইনো হেরিটেজ
![](https://i0.wp.com/ritujanpub.com/wp-content/uploads/2021/04/download-1-3.jpg?resize=488%2C338&ssl=1)
শিয়ালদহ থেকে ট্রেনে জলপাইগুড়ি। সেখানের থেকে টয়ট্রেন বা গাড়িতে যেতে হবে দার্জিলিং। পশ্চিমবঙ্গের আরও উত্তরে গেলে মিলবে এই গেস্ট হাউস। দার্জিলিং থেকে প্রায় ২৮ কিমি দূরে পাহাড়ের কোলে রয়েছে সাইনো হেরিটেজ গেস্টহাউস। একসময় ব্রিটিশ সাহেবদের শাসন চলত এই ঐতিহ্যশালী জায়গা থেকে। এখানে গেলে রয়্যাল এক ইংরেজ হয়ে উঠতেই পারেন। এখানে রাতে ঠান্ডা আবহাওয়ার মধ্যেই রয়েছে ‘বনফায়ার’-এর আকর্ষণ। তার সাথেই এই স্থানের সিনিক বিউটি বাড়ির বারান্দা থেকে দেখতে পাবেন। পাহাড়ি প্রকৃতির মাঝে যদি হারিয়ে যান তাহলে খুব ভাল ডেস্টিনেশন। নতুন বিয়ের পরে বা পঁচিশ বছরের বিবাহবার্ষিকীতে ‘ক্যান্ডেল লাইট ডিনার’-এর রাজকীয় ব্যবস্থা রয়েছে। প্রতিটি ঘরের ভাড়া ৩০০০ টাকা থেকে শুরু। যোগাযোগ- 094749 63183
ইটাচুনা রাজবাড়ি
![](https://i0.wp.com/ritujanpub.com/wp-content/uploads/2021/04/rajbari-entrance.jpg?resize=550%2C367&ssl=1)
দ্বিতীয় হুগলী সেতু পেরিয়ে দুর্গাপুর এক্সপ্রেসওয়ে ধরে দেড়ঘণ্টার রাস্তা পেরোলেই এই রাজবাড়িতে পৌঁছে যাবেন। হুগলীর চুঁচুড়া থেকে গাড়িতে ১৯ কিমি এগোলেই হালসুই মোড়ের কাছে পৌঁছে যাবেন। বাঁদিকে বেঁকলেই ইটাচুনা গ্রাম দেখতে পাবেন। আপনি হুগলীর চুঁচুড়ায় ট্রেনেও আসতে পারেন হাওড়া থেকে। ট্রেনে গেলে হাওড়া থেকে বর্ধমান মেন লাইনে নামতে হবে খন্যান স্টেশনে। সেখানে নেমে রিক্সাতে আপনি পৌঁছে যাবেন এই রাজবাড়িতে। রাজবাড়িতে বিখ্যাত মদনমোহনের মন্দির ছাড়াও দেখার জন্য রয়েছে অনেক দ্রষ্টব্য স্থান। প্রসঙ্গত জানিয়ে রাখি এখানেই সোনাক্ষী-রনবীর অভিনীত ছবি ‘লুটেরা’-র শ্যুটিং করা হয়েছিল। পর্যটকদের থাকার জন্য এখানে খুব যত্নের সাথেই ১৪টি ঘরের বন্দোবস্ত রয়েছে। এছাড়াও এখানে এলে পাবেন রাজকীয় বাঙালী খাবারের সুঘ্রাণ ও পেটপুজোর সুযোগ। এখানে ঘর প্রতিটি ভাড়া ৩০০০ টাকা থেকে আরম্ভ হচ্ছে। যোগাযোগ- 098302 36940
![](https://i0.wp.com/ritujanpub.com/wp-content/uploads/2021/04/images-1.jpg?resize=614%2C344&ssl=1)