তুই আর আমি – সোমাদ্রি সাহা
আজ পান্ডুলিপি জমা দেবো বলে তুই স্কুল কামাই করলি
তোর তো সিএল ছিল না, তোর তো…
অরিন চুপ কর, একদম কথা নয়…চল আগে জমা দিবি, তারপর
হুম…
দেখবি বাতিল করে দেবে
দিক…
তবু তুই তো দিলি অরিন
দিলাম, তোর পাগলামোতে
হুম…চল এবার গঙ্গার ধারে যাই
স্টিমারে উঠি
ওঠ
শোন না তোর বই বের হলে কী খাওয়াবি?
কিছু না…চুমু খাবো জড়িয়ে
তাই…
আমি কিন্তু এটা আশা করিনি, তোর কাছে
আরে আমার বই বের হবে না
চুমুও খাবো না
তুই আমায় যেমন রিজেক্ট করে
অনুভবকে বিয়ে করেছিস
তেমনি আমার পান্ডুলিপি
এভাবে নৌকো হয়ে যাবে…
মানেটা কী?
তুই আজ পাবলিশারকে কী জমা দিলি?
দিলাম পান্ডুলিপি
কিসের
তুই যে প্রেমপত্র দিয়েছিলি আমায়
ও গুলো সাহিত্য
আর আমি যা লিখি
সব বাখওয়াস
তুই ছোটবেলা রান্নাবাটি খেলা যে প্রেমপত্রগুলো
ওগুলো বড্ড নস্টাল অনু
স্টিমারটা আহিরীটোলায় দাঁড়ালো
দু ‘জনেই নেমে পড়ল
অনুভা বুকের মধ্যে অরিনের পান্ডুলিপি
জড়িয়ে রেখেছে…
মেন রোড কিছুটা দূরেই
উদভ্রান্তের মতো একটা উবের করল
পাবলিকেশনের অফিস বন্ধ হতে পাঁচ মিনিট বাকি
দিলো জমা…
(দুই)
অনুভা বাড়ি ফিরছে, তবে আজ সিঁদুর নেই মাথায়
রয়েছে ভালবাসা
আর রয়েছে কলঙ্কিত সময়
কাল থেকে অনুভা অরিনের জন্যই আবার লিখবে
সব বিয়ে বিয়ে হয় না
সব সিঁদুরে বিয়ে হয় না
সিঁদুর মানেই মিলন নয়
মিলন মানেই প্রেম নয়
প্রেম মানে ভালবাসা নয়
ভালবাসা মানেই কাছে আসা নয়
কাছে আসা মানেই ত্যাগ নয়
ত্যাগ তো মিথ
মিথ তো মায়ার
মায়াই ঈশ্বর
ঐশ্বরিক এক জ্যোতি স্পর্শ করছে অনুভাকে
অরিনও লিখতে বসল সাদা পাতায়
এক রাশ কান্নারক্তই আগুনপাখি আজ
তৈরি হলো নতুন ফুলের সম্ভাবনা
মানুষ তাকেই একদিন চিনবে হেমকরবী রূপে
কবিতার রূপ অরূপরতন
তা অরিনের লেখায় বুঝেছিল অনুভা
প্রথম আলিঙ্গনে, কলেজে, অনেক আগেই
(তিন)
ছয় মাস পর
কবিতার বই হয়নি, প্রেম পত্রও বের হয়নি
তবে দুই জনে এখন দেখতে শিখেছে আকাশ
আকাশের রংটা অদ্ভুত
আসলে ওরা জানে না, আকাশের কোনও রং নেই
নিরাকার
ঠিক ভালবাসার মতো নিরাকার
স্পর্শ করা তো দূর ছুঁতেও পারবে না
দুই জনের মধ্যে ঝগড়া হবে মেদবহুল, অনন্তকাল
অনন্ত আকাশে